সিরাজগঞ্জ প্রতিবেদক:
সিরাজগঞ্জ রোড এলাকায় মাঝে মধ্যেই ঘটছে চুরি- ছিনতাইয়ের ঘটনা। অধিকাংশে ছিনতাইয়ের ঘটনায় বাদী থানায় যাচ্ছে না, আবার কিছু কিছু চাঞ্চল্যকর ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে। রবিবার বোয়ালিয়া হাটে থেকে ফেরার পথে এক ব্যবসায়ীর ৫লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই করে একটি চক্র। এসব ঘটনার পিছনে রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। কিছুদিন পূর্বে রোড, হাটিকুমরুল, সলঙ্গা, নলকা সাহেবগঞ্জ এলাকার চুরি ছিনতাইয়ের মাস্টারমাইন্ড ডাকাতির প্রস্তুতি মামলার অন্যতম আসামি শাকিল র্যাবের হাতে আটক হয়েছে। শাকিল আটক হলেও এ চক্রের অন্যতম মূল হোতা মুনজুর আহমেদ ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। মুনজুর আহমেদ রশিদপুর নয়াপড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে।শাকিল আটক হওয়ার পর বেশ কিছুদিন গা ঢাকা দেয়ার পর আবারো প্রকাশ্যে এসেছে কিশোর গ্যাং চক্রের মূল হোতা মুনজুর আহমেদ। সিরাজগঞ্জ রোড এলাকায় বেক্সিমকো কোম্পানির এজেন্টের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাতেও মুনজুর আহমেদ নাম উঠে এসেছে বারবার। এর আগেও কয়েকটি চুরি ছিনতাইয়ের সাথে মুনজুর আহমেদ জড়িত আছে বলে অনেকে কানাঘোষা করছেন। রবিবার গরু ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ে এ চক্র জড়িত আছে বলে স্থানীয়রা বলছেন। রোড এলাকার সকলের ধারনা এই এলাকায় যত চুরিঈদুল ফিতরেরমুনজুর আহমেদডাকাতি ছিনতাই হয় সব ঘটনার পিছনে শাকিল মুনজুর আহমেদ চক্রের হাত দিয়ে হয়ে থাকে। শাকিল আটক হওয়ার পর কিছুদিন মুনজুর গা ঢাকা দিয়ে থাকায় এলাকায় ছিনতাই কিছুটা কমলেও মুঞ্জুর আবারো প্রকাশ্যে আসার ছিনতাই শুরু হয়েছে। এঘটনায় শাকিল চক্রের সদস্য মুনজুরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবী জানান সচেতন মহল।তথ্য অনুসন্ধান ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেপরোয়া কিশোর গ্যাং চক্রের হোতা মুনজুর আহমেদ তথ্য প্রযুক্তি লীগ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি। বিগত সময়ে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আরমান আলীর ক্যাডার হিসেবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। এছাড়া নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে মাদক জুয়া ছিনতাইসহ সব ধরনের অপরাধ মুনজুর আহমেদের দ্বারা সংগঠিত হয়েছে। হাটিকুমরুল সিরাজগঞ্জ রোডসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও মাদকদ্রব্য বিস্তার করেছে এ চক্রটি। এরই মধ্যে মুনজুর আহমেদ গ্যাংয়ের অন্যতম সদস্য শাকিলকে আটক করেছে র্যাব। শাকিল আটক হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে থেকেছে মুনজুর আহমেদ। কিছুদিন আত্মগোপনে থাকলেও এখন প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মুনজুর আহমেদ। স্থানীয়দের দাবি মুনজুরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেমহাসড়কে ডাকাতি ছিনতাই ও মাদক কারবারের তথ্য পাবে আইনশৃখলা বাহিনী।জানা গেছে, বিগত সময়ে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আরমান আলীর বিভিন্ন অপকর্ম মুনজুরের হাত দিয়ে সংগঠিত হতো। সেসময় থেকে মুনজুর শাকিলসহ কয়েকজনের একটি গ্যাং নেশাজাত দ্রব্য ইয়াবা জন্ম- বিক্রি, সেবন ছিনতাইসহ ডাকাতিতেও জড়িয়ে পড়ে। এচক্রটি সন্ধার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ রোড, হাটিকুমরুল, পাচলিয়া, হরিনচড়া, দবিরগঞ্জ তাড়াশের ১০নং ব্রিজসহ বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেয়। র্যাবের অভিযানে থমকে গেলেও গোপনে চলতে থাকে শাকিল মুনজুরের অপরাধী কার্যক্রম। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর তথ্য প্রযুক্তি লীগ থেকে মুনজুর আহমেদ ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সাথে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ৫ আগস্টের পর থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এচক্রটি। দিনে দুপুরে সিরাজগঞ্জ রোডসহ আশপাশের এলাকায় দূর-দুরান্ত থেকে আগত ব্যক্তিদের থেকে মোবাইলসহ টাকা গহনা ছিনতাই করতে থাকে। গ্রাম পাড়া-মহল্লায় এ চক্রের সদস্যরা মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্কও সৃষ্টি করে। সিরাজগঞ্জ রোডের বগুড়া মহাসড়কের চায়ের দোকানে মধ্য বয়সী এক ব্যক্তি বলেন, এই চক্রটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলো। এ চক্রের শাকিলকে আটকের পর এলাকায় ছিনতাই কিছুটা কমেছে। তবে মূলহোতা মুনজুর এখনো আটক হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মুনজুরকে আটক করলে সিরাজগঞ্জ রোড সহ আশপাশের এলাকা থেকে ছিনতাইসহ সব রকম অপরাধ কমে যাবে।সেখানে থাকা চড়িয়া দক্ষিণ পাড়া এলাকার অপর এক ব্যক্তি বলেন, মুনজুরের অপরাধ মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেছে। তার অপরাধের বিষয়ে এমন কোন ব্যক্তি নাই যে জানে না। অত্যন্ত উশৃঙ্খল ও বেপরোয়া সে। সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোখলেচুর রহমানকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
0 coment rios: